ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

৩ মেয়র ও ৩৭ কাউন্সিলর প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত!

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে ৩ মেয়র প্রার্থীসহ ৩৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডের ৬৪ প্রার্থীর মধ্যে ৩২ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন ৫ জন প্রার্থী। কক্সবাজার পৌরসভায় নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ শেষে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন পাঁচ জন। মোট ভোটার ৮৩ হাজার ৭২৮ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৫৮ হাজার ১০৭। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুজিবুর রহমান পেয়েছেন ৪১ হাজার ২৫৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১০ হাজার ১৪৭ ভোট। জামায়াত সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী সরওয়ার কামাল পেয়েছেন ৪ হাজার ১৪৬ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুই প্রার্থীর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী জাহেদুর রহমান ৫৯৫ ভোট এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী রুহুল আমিন ৪৮০ ভোট পেয়েছেন। এর মধ্যে মুজিবুর রহমান এবং রফিকুল ইসলাম ছাড়া বাকি ৩ জনই জামানত হারিয়েছেন।
কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগের কম ভোট পেলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। জামানত হিসেবে মেয়র পদে ২৫ হাজার টাকা, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫ হাজার টাকা এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে। সে হিসাবে ৩ মেয়র প্রার্থী, ৫ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ৩২ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর জামানত হিসেবে মোট ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা হচ্ছে সরকারের কোষাগারে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, সংরক্ষিত কাউন্সিলর-১ পদে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৬ হাজার ২৫৭। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন, আয়েশা সিরাজ (প্রাপ্ত ভোট ১৯৬৩) ও টিপু সুলতানা (প্রাপ্ত ভোট ৫৭০)। সংরক্ষিত কাউন্সিলর-২ পদে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৪ হাজার ৭৯৪। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন রেবেকা সুলতানা (প্রাপ্ত ভোট ১২১৫)। সংরক্ষিত কাউন্সিলর-৩ পদে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৮৬। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন পাঁচ জন। তাদের মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন জোৎ¯œা আকতার (প্রাপ্ত ভোট ১২৭০) ও সুমা দাশ (প্রাপ্ত ভোট ৫২০)।
সাধারণ ওয়ার্ড-১ এ প্রদত্ত ভোট ৬ হাজার ৯৮। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন রাহামত উল্লাহ (প্রাপ্ত ভোট ২৪৭), সিকান্দর আবু জাফর (প্রাপ্ত ভোট ২৫৮) ও মোস্তাক আহমদ ( প্রাপ্ত ভোট ০)। সাধারণ ওয়ার্ড-২ এ প্রদত্ত ভোট ৫ হাজার ৬১৫। সেখানে জামানত হারাচ্ছেন আবু তাহের (প্রাপ্ত ভোট ২২), এম জাফর আলম হেলালী (প্রাপ্ত ভোট ৩৮৬) ও হোসাইন ইসলাম বাহাদুর (প্রাপ্ত ভোট ৪৮০)। সাধারণ ওয়ার্ড-৪ এ প্রদত্ত ভোট ৪ হাজার ৫৫৩। সেখানে জামানত হারাচ্ছেন আবু খালিদ (প্রাপ্ত ভোট ৮৬), এরশাদুজ্জামান (প্রাপ্ত ভোট ১), নুরুল আবছার (প্রাপ্ত ভোট ২২) ও সিরাজুল হক (প্রাপ্ত ভোট ৫১৮)। সাধারণ ওয়ার্ড-৫ এ প্রদত্ত ভোট ৪ হাজার ৮১৭। জামানত হারাচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থী ছালামত উল্লাহ বাবুল (প্রাপ্ত ভোট ৬০১)। সাধারণ ওয়ার্ড-৬ এ প্রদত্ত ভোট ৫ হাজার ৫০৮। জামানত হারাচ্ছেন নাছির উদ্দিন (প্রাপ্ত ভোট ৭৩), ফাহাদ আলী (প্রাপ্ত ভোট ৪৪৩), মনিরুল হক (প্রাপ্ত ভোট ২), মো: শহীদুল্লাহ (প্রাপ্ত ভোট ২১৫), মোশারফ আজাদ মনছুর (প্রাপ্ত ভোট ১৩৪), শফিউল আলম (প্রাপ্ত ভোট ২৩৭) ও শাহ আলম (প্রাপ্ত ভোট ১৭৭)। সাধারণ ওয়ার্ড-৭ এ প্রদত্ত ভোট ৫ হাজার ৪৩৩। সেখানে জামানত হারাচ্ছেন ফোরকান আহমদ খোকন (প্রাপ্ত ভোট ৪৭৪) ও মুহাম্মদ রশিদ (প্রাপ্ত ভোট ৯১)। সাধারণ ওয়ার্ড-৮ এ প্রদত্ত ভোট ৪ হাজার ১৭। সেখানে জামানত হারাচ্ছেন মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (প্রাপ্ত ভোট ৩০৭) ও রাজিব পাল (প্রাপ্ত ভোট ১১৩)। সাধারণ ওয়ার্ড-৯ এ প্রদত্ত ভোট ৪ হাজার ২৩৬। সেখানে জামানত হারাচ্ছে মো: শওকত আলম (প্রাপ্ত ভোট ৯৩)। সাধারণ ওয়ার্ড-১০ এ প্রদত্ত ভোট ৫ হাজার ৮৯। ওই ওয়ার্ডে জামানত বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে জাবেদ মো: কায়সার নোবেলের (প্রাপ্ত ভোট ৪১৫)। সাধারণ ওয়ার্ড-১১ এ প্রদত্ত ভোট ৩ হাজার ৩০। সেখানে জামানত বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে আমীর হোসেন (প্রাপ্ত ভোট ৭২), আহম্মদ হোসেন (প্রাপ্ত ভোট ১১৭) মো: শফিউল আলম (প্রাপ্ত ভোট ১১৩), মোহাম্মদ জরিপ আলী (প্রাপ্ত ভোট ৩৬২) ও মো ঃ হেলাল উদ্দিনের (প্রাপ্ত ভোট ৬২)। সাধারণ ওয়ার্ড-১২ এ প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৫ হাজার ১২০। সেখানে জামানত বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে আবুল মনছুর (প্রাপ্ত ভোট ৯), কাজী রাশেল আহমদ (প্রাপ্ত ভোট ৫) ও মো: জসিম উদ্দিনের (প্রাপ্ত ভোট ২)।
প্রসঙ্গত, প্রায় সাড়ে ৭ বছর পর গত ২৫ জুলাই কক্সবাজার পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৭ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

পাঠকের মতামত: